কম্বিনেশন স্কিন কেয়ার

কারো স্কিন ড্রাই অথবা কারো  অয়েলি, কিন্তু কেউ কেউ আছেন যাদের স্কিন অয়েলি আবার ড্রাই দু 'টোই। এই ধরনের ত্বক কে বলা হয় কম্বিনেশন স্কিন।

আমাদের ত্বকের কপাল ও নাকের অংশকে T -জোন বলা হয়।‌‌আবার ত্বকের থুতনি (chin) ও গাল (cheek) এই দুই অংশ কে বলা হয় U -জোন।

কম্বিনেশন স্কিন এ T জোন ও U জোন গুরুত্বপূর্ণ। কারন, কম্বিনেশন স্কিন এ সাধারণত টি জোন অয়েলি এবং ইউ জোন ড্রাই থাকে।এটিই হলো কম্বিনেশন স্কিন বোঝার উপায়।

এছাড়া, T জোন এর অয়েল সিক্রেশন ঋতু পরিবর্তন এর সাথে কম বেশি হতে পারে, কম্বিনেশন স্কিনে এ। কম্বিনেশন স্কিনে সাধারণত চিক ও চিন অংশের তুলনায় নাকের পোর (nosepores) গুলো বেশি দেখা যায়।

এইসব কারনে,কম্বিনেশন স্কিন কেয়ার কঠিন স্কিন কেয়ার হিসেবে ধরে নেওয়া হয়।

ক্লিনজিং

কম্বিনেশন স্কিন এ যেহেতু T জোন অংশটি অয়েলি তাই এই অংশে ফেইস ওয়াশ কিছুক্ষন রেখে এক্সেস ফেইস ওয়াশ বাকি অংশ এ ব্যবহার করলে ভালো ফলাফল পাওয়া যাবে।

এই ক্ষেত্রে স্যালিসাইলিক এসিড যুক্ত,জেল টাইপ,লো পিএইচ যুক্ত ফেইস ওয়াশ ব্যবহার করা যাবে।

কিউই (kiwi) যুক্ত ফেইস ওয়াশ ব্যবহার করা যাবে কারণ এটিতে ভিটাসিন সি থাকে যা কোলাজেন প্রোডাকশন করে যা কম্বিনেশন স্কিনের জন্য উপযোগী এবং এটি T জোন কে গ্রীজি হওয়া থেকে বাধা দেয়।

ক্লিনজিং এর পাশাপাশি স্ক্রাব ব্যবহার করতে চাইলে সেটি অবশ্যই মাইল্ড হতে হবে। সেক্ষেত্রে ক্যামিকেল এক্সফোলিয়েটর এর জন্য গ্লাইকোলিক এসিড ও স্যালিসাইলিক এসিড যুক্ত ফেইসওয়াশ ব্যবহার করলে তা স্ক্রাব এর কাজ ও করবে।কারন এই এসিড গুলো অয়েল প্রোডাকশন  ব্যালেন্স করে, ত্বকের ছিদ্র কে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে।

টোনার

কম্বিনেশন স্কিনে ভারী টোনার ব্যবহার করা যাবে না এতে টি জোন অংশ আরো গ্রিজী হয়ে যাবে। তাই লাইটওয়েট টোনার ব্যবহার করতে হবে। অবশ্যই তা এলকোহল ফ্রি হওয়া ভালো।তাতে যদি ৫% ম্যান্ডেলিক এসিড তাকে তবে সেটি, এই স্কিন টাইপে ব্যবহার করা যাবে।

কম্বিনেশন স্কিন এর জন্য রিচ এন্টি অক্সিডেন্ট যুক্ত ডিহাইড্রেটেড টোনার বেস্ট।

টোনার কটন প্যাড দিয়ে ব্যবহার করা যাবে।কম্বিনেশন স্কিনের ড্রাই এরিয়া তে এক্সট্রা লেয়ার টোনার ব্যবহার করা যেতে পারে স্কিনকে ব্যালেন্সড হেলথি রাখতে।

সিরাম

ত্বকের এক্সট্রা কেয়ার করতে চাইলে সিরাম ব্যবহার করতে পারেন।তবে হালকা প্রকৃতির সিরাম ব্যবহার করা ভালো, যা ত্বকের ময়েশ্চার বাড়াবে এবং গ্রিজীনেস কে কমাবে।

সিরাম শুধুমাত্র ড্রাই অংশে ব্যবহার করা উচিত যেমন চোখের আশেপাশে ও মুখের আশেপাশে।বেশি পরিমাণে সিরাম ব্যবহার করা যাবে না।

এছাড়া, কম্বিনেশন স্কিন এ শিট মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন।যেটি ত্বককে হাইড্রেটেড রাখবে। এই ক্ষেত্রে কটন প্যাড কে টোনার এ সোকড করেও শিট মাস্ক হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।

ময়েশ্চারাইজার

সব ময়েশ্চারাইজার সব ঋতুর জন্য উপযুক্ত নয়।তাই ময়েশ্চারাইজার ঋতু বিশেষে পরিবর্তন করা ভালো।

তাই গ্রীষ্মে জেল বেসড ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করবেন যা স্কিনের ময়েশ্চার ধরে রাখে।আবার শীত কালে ক্রিম বেসড অর্থাৎ একটু ভারী ময়েশ্চাইরাইজার উপযোগী।

স্কিনের U জোন এ মোটা(thick) লেয়ার এ ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করা উচিত কারন কম্বিনেশন স্কিন এ এই অংশ টি বেশি ড্রাই থাকে।

সানস্ক্রিন

সব স্কিনের জন্য সানস্ক্রিন দরকার একইভাবে কম্বিনেশন স্কিন এর ও।‌‌ননস্টিকি ও লাইট ওয়েট সানস্ক্রিন ক্রিম ব্যবহার করলে ভালো।সেক্ষেত্রে, জেল বেসড সানস্ক্রিন ব্যবহার করা যাবে।‌‌যদি কম্বিনেশন স্কিন সেনসেটিভ হয় তবে জিংক অক্সাইড যুক্ত জেল বেসড সান স্ক্রিন ক্রিম ব্যবহার করা উপযোগী।

এন্টিএজিং

কম্বিনেশন স্কিন এ নাকের পোরস গুলা সহজে উন্মুক্ত হয়ে যায়। তাই ০.৫ % ট্রেটেনোয়েন ক্রিম ব্যবহার করা যাবে, অল্প পরিমানে শুধুমাত্র নাকের অংশ এ। সেন্সটিভ স্কিন হলে আধা ঘন্টা রেখে ফেইস ওয়াশ করে ফেলতে পারেন।‌‌

এছাড়া এন্টি এজিং এর জন্য বেস্ট রেটিনল,হায়ালুরনিক এসিড,৬% গ্লাইকোলিক এসিড সপ্তাহে দু'বার করে ব্যবহার করা যাবে।

>কম্বিনেশন স্কিন অবশ্যই অন্য স্কিন টাইপ থেকে যত্ন করা কঠিন কাজ।কিন্তু যত অবহেলা করবেন কাজটি তত সহজ হবে না তার বিপরীতই হবে।তাই বাজারের স্কিন কেয়ার এর কোনটি আপনার ত্বকের জন্য উপযুক্ত তা জেনে ব্যবহার করলেই কাজটি সহজ করতে পারেন। তাই আজ থেকেই দেখেশুনে শুরু করুন আপনার কম্বিনেশন স্কিন কেয়ার এবং নিজের সৌন্দর্য কে ফুটিয়ে তুলুন।

If you find this post helpful or interesting, please share it.

Don't forget to follow our @Facebook and @Twitter